মি. ডেবিট ব্রুম পপকিন।বর্তমান প্রজন্মের সবচেয়ে সফল চিকিত্সা বিজ্ঞানী।বলছি এক অদ্ভূত প্রাজন্মিক সময়ের কথা।যখন মানুষই কি-না ধীরে ধীরে রোবট হয়ে যেতে শুরু করেছে।শুধু আচার আচরণ আর কাজে কর্মে নয়।একেবারে সত্যি সত্যিই রোবট!জানা গেছে,এক ধরণের বিশেষ ভাইরাসের প্রভাবে এমনটি হচ্ছে।বিশেষ করে নব প্রজন্মের লোকেরা এ অদ্ভূত টাইপের রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।বিখ্যাত চিকিত্সা গবেষণাগার হারি রিচার্স ফাউন্ডেশনের এক জরিপে দেখা গেছে এ রোগে-“ওল্ড জেনারেশনের এফেক্টেড রেট ০.১ % ,মিডল জেনারেশনের ১০ % ,ইয়ং জেনারেশনের ৫০ % ,টীন জেনারেশনের ৮০ % এন্ড চাইল্ড জেনারেশনের অল এবাউট ১০০ %”তার মানে সবচেয়ে সেফ জুনে আছে ওল্ড জেনারেশন আর ডেন্জার জুনে চাইল্ড জেনারেশন।এভাবে চলতে থাকলে এক দশক পরেই আর একটাও হিউম্যান বিং পাওয়া যাবেনা বলে ধারণা করা হচ্ছে।বিজ্ঞানীরা নতুন এ রোগের নাম দিয়েছে- রেটিস (রবো এফেকশনেট ট্রাসমিশন ইমিউন সিনড্রোম)।আর এর ভাইরাসকে চিহ্নিত করা হয়েছে- আর এস ভি (রবো সিগন্যাল ভাইরাস) নামে।এ রোগের সূত্রপাত প্রথম লক্ষ করা গেছে চায়নাতে।এরপর ক্রমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।তবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের হার হচ্ছে উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর দেশে।আর আতঙ্কের কারণ হল,এখনো এ রোগ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা তেমন কিছুই জানতে পারে নি।অর্থাত্ কি করে এর সূত্রপাত হয়,এর প্রতিরোধ ও প্রতিষেধক কি হতে পারে,কিংবা কোন প্রাথমিক চিকিত্সা- কিছুই বের করতে পারেনি তারা।পৃথিবীর নামি দামি বিজ্ঞানীরাও হতবাক হয়ে গেছে মানুষের এমন অদ্ভুত বিবর্তন দেখে।তবে আরো আতঙ্কের বিষয় হল- কিছু কিছু বিজ্ঞানীরাও এরোগে আক্রান্ত হয়ে দিন দিন রোবট হয়ে যাচ্ছে।যাদের অনেকেই খ্যাতি অর্জন করতে সমর্থ হয়েছেন তাদের মেধা আর গবেষণার জন্য।তাই বিখ্যাত বিজ্ঞানী মি. ডেবিট ব্রুম পপকিনের উপর দায়িত্ব পড়ে যেভাবেই হোক এর প্রতিরোধের স্থায়ী না হোক,অন্তত অস্থায়ি একটা ব্যবস্থা বের করার।দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে মি. ডেবিট ব্রুম নিরলস গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন এ রোগের রহস্য ত্বত্ত বের করার জন্য।কিন্তু এটা এমনি অদ্ভূত টাইপের রোগ,যার বিস্তার গতি এত বেশি যে-প্রতি সেকেন্ডে ৫ জন করে আক্রান্ত হচ্ছে।আর সম্পূর্ণ রোবট হয়ে যাচ্ছে ৭ শতাংশ মানুষ।কাজেই অনেক ভেবে চিন্তে বিজ্ঞানী ডেবিট ব্রুম সিদ্ধান্ত নিলেন-একটু বিকল্প চেষ্টা চালানোর।আর তা হল-সমস্ত বিশ্ববাসীকে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে,এরোগের ব্যাপারে তাদের নিজ নিজ মন্তব্য তুলে ধরার জন্য।এতে যদি কোন উপায় বের হয় তো হবে।নতুবা মানব সমাজকে রোবট হয়েই জীবন যাপন করতে হবে !তাই পরিকল্পনামাফিক জানিয়ে দেয়া হল সবাইকে।
এদিকে বাংলাদেশ নামক একটি ছোট্ট দেশে বাস করছে এক গরীব মুসলিম কিশোর।নাম তার হাবীব বিন আব্দুস সাত্তার।এ রোগটি তাকেও অনেক ভাবিয়ে তুলেছে।যদিও এদেশে এ রোগের আক্রান্তের হার অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম-২৫ %।হাবিব এখন কুরআন-হাদীস শিক্ষা সমাপ্ত করে কুরআন ও বিজ্ঞান বিষয়ে বিশেষ শিক্ষা লাভ করছে- প্রখ্যাত কুরআন বিশারদ আল্লামা আব্দুল হাকিম বিন সাদিক বিন সাদ মাদানীর কাছে।মাদানী সাহেব দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।এখানে তিনি কুরআনের আলোকে বিজ্ঞান শিক্ষালয় স্থাপন করে মুসলমানদেরকে বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলছেন।এদের মধ্যে হাবীবের মাঝে তিনি বিশেষ সম্ভাবনার আলো দেখতে পেয়েছেন।তাই হাবীব তাঁর সবচেয়ে প্রিয় ছাত্র।যাই হোক,বিজ্ঞানী মি. ডেবিট ব্রুমের ঘোষণার পর থেকে হাবিব এ বিষয়টা নিয়ে আরো বেশি সিরিয়াস হয়ে গেছে।সারাক্ষণই চলছে তার কুরআন নির্ভর গবেষণা।সেইসাথে প্রতি রাতের শেষ প্রহরে মহান আল্লাহর দরবারে নামায পড়ে কান্নাকাটি করছে,আর মানব জাতিকে এ মারাত্নক রোগ থেকে মুক্তির পথ বাতলে দিতে একান্ত বিনয়ের সাথে মুনাজাত করছে।এমনি এক রাতে মুনাজাত শেষ করার পর তার অন্তরের মাঝে কেমন করে কে যেন,চুপি চুপি বলতে শুরু করল- মানুষ তাই অর্জন করে,যা সে নিজে উপার্জন করে।তার মানে- মানুষ তার স্বীয় কর্মের প্রতিফলই কেবল ভোগ করে।কাজেই মানুষই দায়ী তাদের এরকম রোবটিক বিবর্তনের জন্য।এই ত্বত্তটিকে ভিত্তি ধরে হাবীব সিদ্ধান্ত নিল- সে আবার সেই আগের গবেষণা পদ্ধতিতে ফিরে যাবে।যা আজ থেকে দেড় হাজার বছর আগে ব্যবহার করা হত।আর তা হল এ রোগে আক্রান্ত আর না আক্রান্তদের মৌখিক সাক্ষাতকার।যদিও এ যুগে এটা নিতান্তই হাস্যকর একটা বিষয়।কেননা পৃথিবী এখন বিজ্ঞানের দিক থেকে অনেক দূর এগিয়ে গেছে।যাই হোক,শিকড় ছাড়া যেমন গাছ বাঁচতে পারেনা;তেমনি নিজেদের পূর্ব ঐতিহ্য ভুলেও মানুষ বেশি দিন টিকতে পারেনা।যার প্রমাণ এই অজানা আর অদ্ভূত টাইপের রোগ।কাজেই সাক্ষাতকার তাকে নিতেই হবে।বসে গেল টিনি স্লেটের সামনে।”স্পিক আউট করল,ওয়ান্ট টু মিট দ্যা রেটিস পেশেন্ট।”সাথে সাথে স্ক্রীনে ভেসে আসল শতশত রেটিস রোগী।এদের মধ্যে এক এক করে সাক্ষাতকার নিতে শুরু করল হাবিব।সাক্ষাতকারের ফলাফলে যা দেখা গেল এরোগে তারাই বেশি আক্রান্ত,যারা রোবটের সাথে যৌন সম্পর্ক রাখে।কিন্তু অবাক হওয়ার বিষয় একটাই তা হল- রোবটতো নিতান্তই যন্ত্র।তাহলে এর প্রভাবে কি করে মানুষের এরূপ বিবর্তন হতে পারে?পারে।কারণ এর যথেষ্ট লজিক রয়েছে।যা আরো বিস্তর গবেষণায় বেরিয়ে আসতে পারে।কাজেই হাবিব এ সকল বিষয়ের সমন্বয়ে একটি মেইল পোস্ট করে দিল বিজ্ঞানী মি. ডেবিট ব্রুম পপকিনকে।
এদিকে ঘোষণার পর থেকে অনেকেই অনেক ধরণের মতামত ব্যক্ত করে মেইল পাঠাতে শুরু করল।কিন্তু যথেষ্ট যুক্তির অভাবে সবগুলোই বাতিলযোগ্য প্রমাণিত হল।তবে হাবিবের তথ্যে যথেষ্ট যুক্তি দেখতে পেয়ে তিনি পারস্পরিক যৌন সম্পর্ক রক্ষাকারী রোবট আর মানুষের মধ্যে গবেষণা করে দেখতে পেলেন,আসলে এরকম যৌন সম্পর্কের সময় রোবটের বডি থেকে এমন এক ধরণের রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরিত হয়-যার ফলে এর প্রভাব পরে মানব ভ্রুণের উপর।আর এ কারণেই উদ্ভব হয়েছে রেটিস রোগটি।সুতরাং এর থেকে বাঁচার একটাই উপায়-তা হল রোবট ব্যবহারে কিছু নীতিমালা অনুসরণ করা।এদিকে রেটিস রোগের মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য হাবিবকে এর পুরোপুরি কৃতীত্ব দিয়ে রোবট ব্যবহারের নীতিমালা তৈরি করার দায়িত্ব তারই উপর দেয়া হল।সেইসাথে তাকে একজন সফল বিজ্ঞানীর স্বীকৃতিও দেয়া হল ।