বিশ্বজুড়ে বাংলা চলচ্চিত্রের সন্মান যারা বয়ে বেড়িয়েছেন, যারা এই আলোকে পৌছে দিয়েছেন চরাচরে, সেই শ্রেষ্ঠদের মধ্যে বুকচিতিয়ে আছেন একজন সত্যজিৎ রায়। লিখেছেন একের পর এক গল্প, সম্পাদনার টেবিলে জুড়েছেন একের পর এক রিল, আর আপামত বিশ্ব ওনার নামের পেছনে জুড়েছেন পদক, সন্মাননা তদপরি পৃথিবীর কোন শিল্পী বা শিল্পের মূল্যই, পদক কিংবা অর্থে মূল্যায়ন করার মাপকাঠি নেই। শিল্পির আনন্দ সৃষ্টিতে। সমাজ ও জীবনের সামনে তুলে ধরেছেন স্বচ্ছ আয়না লিখেছেন, একের পর এক অনন্য চিত্রনাট্য, তৈরি করেছেন পথের পাঁচালি, অপুর সংসার, চারুলতা, কাঞ্চনজঙ্গা, আগন্তক, হীরক রাজার দেশে, গুপি গাইন বাঘা বাইনের মত অনবদ্য কালজয়ী সব চলচ্চিত্র। একাই পালন করেছেন চিত্রনাট্যকার, আবহ সংগীত, সম্পাদনা সহ আরো অনেক দায়িত্ব।
বাংলার মানুষ তাদের দুঃখ, বেদনা, আনন্দ, উদযাপনের প্রতিচ্ছবি দেখেছে হয়তো সহস্র আয়নায়। কিন্তু সত্যজিত রায় আর ওনার চলচ্চিত্র স্বচ্ছ, পরিস্কার।
এতটাই পরিস্কার যে যতদিন এই বাংলা চলচ্চিত্র বেঁচে থাকবে ততদিন মনে রাখবে অপু, দূর্গা, চারুলতা, সেই আগন্তক আর ফেলুদাকে।
ঘরে বাইরে, জানা-অজানায় সন্মানও কুড়িয়েছেন অনেক।
জীবনের শেষ অধ্যায়েও হাসপাতালের বিছানায় শোয়ে আন্তজার্তিক একাডেমী পুরস্কার হাতে নিয়ে বলেছেন আজীবন সন্মাননায় অনুভূতির কথা। এক জীবনে ওনার শৈল্পিক পুরস্কৃত হয়েছে কান, শিকাগো, বার্লিনের মত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গন থেকে। নিজের মাটিতে পেয়েছেন ছয় ছয়টি জাতীয় পুরস্কার। পেয়েছেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ পদক দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার। হয়েছেন ভারত রত্ন সন্মানে ভূষিত। আর সমস্ত বাংলা চলচ্চিত্র অঙ্গন হয়েছে অনুপ্রাণিত, হয়েছে সাহসী।
আমাদের গল্প , অনুভূতি বলায় বিশ্ব চলচ্চিত্র ইতিহাসে শ্রেষ্ঠত্বের পাতায় জ্বলজ্বল করছে তাঁর নাম, তাঁর সৃষ্টি।