জেমস ক্যামেরুনের বিখ্যাত চলচ্চিত্র টাইটানিকের বদৌলতেই হোক কিংবা বই পড়ে, টাইটানিক জাহাজ এবং এই জাহাজের সাথে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনা সম্পর্কে আমরা সকলেই কম বেশি জানি। ১৯০৭ সালের শুরু হয় এই জাহাজের নির্মাণ কাজ। ১৯১২ সালের শেষ দিকে শেষ হয় নির্মাণ।
গ্রিক পুরাণের সেই মহা শক্তিশালী দেবতা ‘টাইটান” এর নাম থেকে “টাইটানিক” নাম দেয়া হয় এই দানবআকৃতির জাহাজকে। মহা সমুদ্রে এক ক্ষুদ্র (অনুপাতে) আইসবার্গের ধাক্কায় ডুবে গিয়েছিল এই জাহাজ।
চলুন আজকের জানা অজানায় আমরা এই টাইটানিক জাহাজ সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য জেনে নেই।
টাইটানিক জাহাজ যে আইসবার্গের সাথে ধাক্কায় ডুবে গিয়েছিল সেটা তো জানেন-ই। কিন্তু পুরো জাহাজটি সমুদ্রে তলিয়ে যেতে কতখন সময় লেগেছিল সেটা কি জানেন? সেদিন দুর্ঘটনা ঘটার পর প্রায় ২ ঘন্টা ৪০ মিনিট লেগেছিল জাহাজটি পুরোপুরিভাবে তলিয়ে যেতে।
আইসবার্গটি দেখতে পাওয়ার পর, জাহাজটি ঘুরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তটা যদি আর মাত্র ৩০ সেকেন্ড আগে দেয়া যেত তাহলেই হয়তো দুর্ঘটনা থেকে বাঁচিয়ে ফেলা যেতো এটিকে।
টাইনিকে যে পরিমান লাইফবোট তা ছিল যাত্রীদের তুলনায় নগণ্য। কিন্তু তারপরেও অধিকাংশ লাইফবোটই জাহাজ ছেড়েছিল অপর্যাপ্ত পরিমাণ যাত্রী নিয়ে।
টাইটানিক চলচ্চিত্রের নির্মাণ খরচ ছিল টাইটানিকের জাহাজের নির্মাণ খরচের চেয়েও বেশি।
টাইটানিক যখন ডুবে যাচ্ছিল, জাহাজের গান বাজনার দায়িত্বে থাকা মানুষজন তখন অনর্গল বাজনা বাজিয়েই চলেছিলেন।
সমুদ্রে ডুবে আর ঠাণ্ডায় জমে গিয়ে মরে যাওয়া ১৫০০ মানুষদের মধ্যে মাত্র ৩৩৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল।
টাইটানিকের চতুর্থ ধোঁয়ার চুল্লিটি আসলে নকল ছিল। সেটা দেয়ার কারণ ছিল জাহাজটি আরও শক্তিশালী এবং সুন্দর দেখানো। সমুদ্রে জাহাজটির ভারসাম্যটা বজায় রাখার জন্যও এই চুল্লিটি কাজে আসতো।
এক জাপানিজ টাইটানিক দুর্ঘটনা থেকে বেচে ফিরতে পেরেছিলেন। কিন্তু সারা জীবন তাকে বাঁচতে হয়েছিল একজন “কাপুরুষ” পরিচয়ে। তাঁর দোষ একটাই ছিল, তিনি অন্যদের সাথে মরে না গিয়ে বেচে ফিরতে পেরেছিলেন।
প্রায় এক ডজন দম্পতি তাদের হানিমুনে যাওয়ার উদ্দেশ্যে টাইটানিকে চেপে বসেছিল। তারা সবাই বিলীন হয়ে গিয়েছিল সমুদ্রের নীল পানির নিচে।
যে আইসবার্গের সাথে ধাক্কায় টাইটানিক ডুবে গিয়েছিল সেটি কত সালথেকে সমুদ্রে ভেসে চলছিল জানেন? খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ সাল থেকে।
সমদ্রের গভীরে হারিয়ে যাওয়া টাইটানিককে খুঁজে বের করতে প্রায় ৭৩ বছর লেগে গিয়েছিল।
১৮৭১ সনে ঘটে যাওয়া এক জাহাজ দুর্ঘটনা থেকে বেচে ফিরেছিলেন এক লোক। সেই দুর্ঘটনার রেশ কাটিয়ে উঠতে লোকটির বেশ কিছু বছর সময় লেগে গিয়েছিল। ১৯১২ সালে এই ব্যক্তি পুনরায় সমুদ্র যাত্রার সিদ্ধান্ত নেন এবং টাইটানিকে চেপে বসেন। এবার আর ফেরা হয়নি তার।