[su_box title=”চলচ্চিত্রের তথ্য” style=”soft”]
- দৈর্ঘ্যঃ ১৩৩ মিনিট
- রঙঃ সাদাকালো, আংশিক রঙিন
- দেশঃ যুক্তরাষ্ট্র
- ভাষাঃ ইংরেজি
- পরিচালনাঃ মিলোস ফোরম্যান
- প্রযোজনাঃ মাইকেল ডগলাস, সল জায়েঞ্জ
- চিত্রনাট্যঃ বো গোল্ডম্যান, লরেন্স হাউবেন, কেন কেসি(উপন্যাস)
- অভিনয়ঃ জ্যাক নিকলসন, উইলিয়াম রেডফিল্ড, লুইস ফ্লেচার, মাইকেল বেরিম্যান, পিটার বোরোক্কো, অ্যালোনজো ব্রাউন
- সঙ্গীতঃ জ্যাক নীতসে চিত্রগ্রহণঃ হ্যাসকেল ওয়েস্লার, বিল বাটলার
- সম্পাদনাঃ শেল্ডন কান, লিনজি ক্লিংম্যান, রিচার্ড চ্যু
[/su_box]
কাহিনী সংক্ষেপঃএই ছবিটি নিয়ে কিছু লিখা সত্যি একটি কঠিন কাজ। ছবিটি প্রধান পাঁচটি ক্ষেত্রেই (ছবি, পরিচালক, অভিনেতা, অভিনেত্রী ও চিত্রনাট্য) অস্কার পেয়েছিল। আমার মনে হয় এই ছবিটিই পরিচালক মিলস ফরমানের সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচালনা। সংলাপগুলো অসাধারন লিখেছেন দুজন লেখকই। সমালোচকরা হাজার বার চেষ্টা করেও কোন খুদ বা ভুল বের করতে পারবেনা ছবিটির। এই কৃতিত্ব অবশ্যই পরিচালক মিলস ফরমানের প্রপ্প্য। দর্শকদের জন্য শিক্ষনিয় অনেক বিষয় আছে ছবিটিতে। কাহিনীর গভিরতা দর্শকদের চোখকে শুধু আটকাবে না, মনকেও বেধে ফেলবে। গল্পটি অসাধারন এবং অবিশ্বাস্য। আমি মনে করি যারা এই ছবিটি দেখেনি তারা জীবনের বিরাট একটা অভিজ্ঞতা হতে বঞ্চিত করছে নিজেদের। মহান একটি শিক্ষা থেকেও দূরে থাকছেন।
কেন কেসির একই শিরোনামের বিখ্যাত উপন্যাসের কাহিনী অবলম্বনে এ চলচ্চিত্র তৈরি করা হয়েছে। র্যান্ডল ম্যাকমার্ফি একজন অপরাধী। এক সংখ্যালঘুকে নির্যাতন করার অপরাধে তাঁর সাজা হয়। কিন্তু ধূর্ত ম্যাকমার্ফি জেলখানাকে এড়ানোর জন্য পাগল সাজার অভিনয় করে। আদালত তাকে মানসিক হাসপাতালে পাঠায় পর্যবেক্ষণের জন্য। চিকিৎসকরা তাকে যথার্থ রোগী বলে ঘোষণা করলে সে সাজা মুক্ত হবে। মানসিক কেন্দ্রে এসে মার্ফি অন্য পাগলদের সঙ্গে বেশ মানিয়ে নেয়। কিন্তু এখানকার প্রধান নার্স রেচেডের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ দেখা দেয়। রেচেড এমনিতেই খুব শীতল প্রকৃতির, হাসপাতালের সবাই তাকে মান্য করে চলে। কিন্তু মার্ফির উদ্দামতা রেচেডের সব নিষেধের বেড়াজাল ভেঙ্গে ফেলে। এমনকি সে একাধিকবার শাস্তিও পায়। কিন্তু অপরাধী হলেও মার্ফি সব মানসিক রোগী আর এই কেন্দ্রের বিষন্ন বাতাসে উৎফুল্লতা ছড়িয়ে দেয়।
এ ছবি দেখার পর জ্যাক নিকলসনে মজে গিয়েছিলাম। এতো নিখুঁত আর চোখ ধাঁধানো অভিনয় খুব কম সিনেমাতেই দেখা যায়। রেচেডের চরিত্রে অভিনয় করা লুইস ফ্লেচারের অভিনয় ছিলো এককথায় অনবদ্য।
বিশেষত্বঃ
ওয়ান ফ্লু ওভার দ্য কাকু’স নেস্ট যথার্থ অর্থেই এক বিপ্লবী আর প্রথাভাঙা ছবি। কেন কেসির বিষ্ময়কর গল্প আর জ্যাক নিকলসন ও লুইস ফ্লেচারের অনবদ্য চরিত্রায়ণ এ ছবিকে আধুনিক ক্লাসিকে পরিণত করেছে। মার্ফি আর নার্সের দ্বন্দের পাশাপাশি ছবিতে মানসিক রোগীদের নিয়ে অনেক অদ্ভুত ও মজার কিছু দৃশ্যায়ণ রয়েছে। এটি একই সঙ্গে বিনোদন আর ভাবনার খোড়াক জোগানোর মতো একটি সিনেমা।
বিশেষ তথ্যঃ
- কেন কেসির এই বিখ্যাত উপন্যাসের স্বত্ব কিনেছিলেন বিখ্যাত অভিনেতা ক্রিক ডগলাস। তিনি ব্রডওয়ে প্রযোজনায় ম্যাকমার্ফির চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু তিনি কোনো স্টুডিওকেই এই সিনেমা প্রযোজনার জন্য রাজি করাতে পারেননি। পরে তিনি সন্তান মাইকেল ডগলাসকে এ ছবির স্বত্ব দিয়ে দেন। মাইকেল ডগলাস ও সল জায়েঞ্জ যৌথভাবে ইউনাইটেড আর্টিস্টের সাথে এ সিনেমার প্রযোজনা করেন।
- এই উপন্যাসের অধিকাংশ মানসিক রোগীর চরিত্রই বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা। কেন কেসি নিজে ক্যালিফোর্নিয়ার এগনিউস হাসপাতালে কাজ করতেন এবং সেখানে দেখা মানুষদেরকেই লেখায় কাজে লাগিয়েছেন।
- মূল উপন্যাসে ন্যাটিভ আমেরিকান চীফ ব্রুমড্যানের জবানিতে মূল ঘটনাটি বর্ণনা করা হয়েছিলো। কিন্তু সিনেমায় এর লেশমাত্র নেই। এছাড়া আরও অনেক অদল-বদল ঘটে। মূল উপন্যাস থেকে পরিচালক মিলোস এতোটাই সরে যান যে বিরক্ত হয়ে কেসি প্রযোজকদের নামে মামলা করেন।
- পাঁচজন অভিনেত্রী ফিরিয়ে দেয়ার পর লুইস ফ্লেচার নার্সের চরিত্রটি করতে রাজি হন। তিনি এই চরিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরষ্কার পান। তিনি প্রথম ব্যক্তি যিনি অস্কার বক্তৃতা সাইন ল্যাঙ্গুয়েজে দেন। তাঁর রোগীরা যেনো বুঝতে পারে তাই তিনি এভাবে বক্তৃতা দেন।
- এ সিনেমার অসংখ্য সহ-অভিনেতা হিসেবে যথার্থ মানসিক রোগীকে ব্যবহার করা হয়েছে।
ওয়ান ফ্লিউ ওভার দ্য কাকু’স নেস্ট চলচ্চিত্র থেকে কিছু স্থিরচিত্রঃ