সবুজ পাতা অক্সিজেন বানায়

বাড়ির সামনে সুন্দর মত একটা পুকুর ছিল।
দুপুর বেলা ইশকুল থেকে ফেরার সময় এক দিন দেখি পুকুরের এক কোনায়
বুদ বুদ উঠছে।
ব্যাপারটা নিয়ে অনেকক্ষন ভাবলাম। একটু ভাল করে খেয়াল করতেই দেখি
পুকুরের ওই জায়গায় অনেক গুলো পাতাঝিঝি আর শ্যাওলার দঙ্গল।
পরদিন ইস্কুলে গিয়ে বিজ্ঞানের স্যার বিপিন বাবুকে ব্যাপারটা বললাম।
স্যার বললেন- আরে ওগুলো তো জলজ গাছপালা শ্বাস ছাড়ছে। ওরা সূর্যের আলো
পেলে শ্বাস নিতে পারে। আর শ্বাস ছাড়লে অক্সিজেন বের হয়।
খুব মজার লাগল আমার কাছে।
হাতে কলমে পরীক্ষা করে দেখতে ইচ্ছা হল।
স্যারকে বলতেই ইস্কুলের গবেষণাগার থেকে একটা কাঁচের টেস্ট টিউব আর কাঁচের ফানেল নিয়ে আমকে ধার দিলেন। ব্যবহার শেষে ফেরত দিতে হবে।

বারান্দায় বেশ রোদ টোদ আসে ভাল মত। ওখানেই পরীক্ষাটা করব ঠিক করলাম।
আগে পুকুর থেকে বেশ কিছু জলজ শ্যাওলা তুলে নিয়ে আসলাম।
রান্নাঘর থেকে বড় একটা বাউল নিয়ে এলাম। পানিতে অর্ধেক ভর্তি করে শ্যাওলা ছেড়ে দিলাম ওটার মধ্যে। শ্যাওলার উপর কাঁচের ফানেলটা উপুর করে রেখে সরু মুখটা রাখলাম উপরের দিকে। এবার ফানেলের সরু মুখের উপর টেস্ট টিউবটা
পানিতে ভর্তি করে উপুর করে দিতেই আমার কাজ শেষ।
বাকি কাজ শুধু সময় করে দিনে একবার করে এসে ওটা দেখে যাওয়া।

প্রথম দিন হয়তো কিছুই দেখবে না। তবে খেয়াল রাখতে হবে রোদ যেন শ্যাওলার উপর পড়ে।
পরদিন থেকেই দেখবে বুদবুদ উঠছে। শুধু তাই না যদি বুদবুদ উঠতে নাও দেখ
খেয়াল করবে টেস্টটিউবের ভেতরের পানি কমে যাচ্ছে। কারন কি ?
কারন ভেতরে গ্যাস জমা হচ্ছে আর গ্যাসের ধাক্কায় পানি বের হয়ে যাচ্ছে।
শ্যাওলার প্রিমানের উপর গ্যাস নির্ভর করবে। টানা পাঁচ ছয় দিন নিরীক্ষণ করতে পার। দিন যদি মেঘলা হয় তবে খেয়াল করবে বুদ বুদ কম উঠছে।
এটা যে অক্সিজেন তার প্রমান কি ?
ভাল কথা। বাউলে হাত দিয়ে আঙুলের সাহায়্যে টেস্ট টিউবের খোলা মুখ আঁটকে বের করে আন।
এবার জ্বলন্ত মোমবাতি সামনে রেখে টেস্ট টিউবের খোলা মুখ থেকে আঙ্গুল সরিয়ে 
নাও। দেখবে মোমবাতির আগুন দপ করে বেশি জ্বলে উঠবে।
কারন- অক্সিজেন আগুন জ্বালাতে সাহায়্য করে।
পরীক্ষাটা বেশ সহজ। আর এটা বায়োলজির বড় একটা জিনিস সহজে শিখে গেলাম আমরা।