ভ্যালেনন্টাইন

কে নানান কথা বলতে পারে। তবে মনে রাখবে নিজের কাছে যা ভাল লাগে সেটা করাই উচিৎ।
অন্যের কথায় কান দেয়ার কি দরকার ? কোন দরকার নেই।
যে কোঁন এক ছুটির দিনে কাজটা ধরতে পার।
মোটামুটি এক সপ্তাহের প্ল্যান করে নাও। বেশি সময় লাগবে না। এক সপ্তাহই কাফি।
শনিবার থেকেই ধরি ? আমার আবার শনিবারটা ভাল লাগে। শুক্রবার সারাদিন রেস্ট নিয়ে শনিবার যে কোন কাজ ধরলে সেটা তরতর করে এগিয়ে যায়। হিন্দুদের অনেকে শনিবার কাজ ধরতে চায় না।
বলে-শনিবারে কাজ ধরলে শনিতে ধরে। ফালতু কথায় কান না দেয়াই ভাল ।
তো শনিবারই ধরি ?
মোটামুটি, তোমার আচরণ স্বাভাবিক রাখবে। কেউ যেন বুঝতে না পারে মনে মনে তুমি কি প্ল্যান এটে রেখেছ ।
সারাটা দিন স্বাভাবিক ভাবে পার কর। গান শোন । সিনেমা দেখ। আজগুবি টাইপের ছবিও চলবে ।মন ভাল হয়ে গেলেই চলবে। দরকার মনে করলে কার্টুন বা রান্নার চ্যানেল ধর।
প্রতিবেশির সাথে ভাল মন্দ কথা বল।
তোমার ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে যে টুলবক্সটা ধার এনেছিলে সেটা রোববার দিন ফেরত দাও। ঐ যে দেয়ালের গায়ে পেইন্টিং ঝোলানোর জন্য নিয়েছিলে । মনে আছে ? হ্যাঁ, ফেরত দাও।
সব কিছুই ফেরত দেবে শুধু হাতুড়িটা বাদে ।বলবে- ওটা হারিয়ে গেছে। পরে একটা কিনে দেবে। ছোট ভাই হয়তো ধরতেও পারবে না তুমি ওটা রেখে দিয়েছ।
হাতুড়ি রেখে দেবে নিরাপদ কোন জায়গাতে । সোফার তলে হলে ভাল হয়। চট করে পেয়ে যাবে যখন দরকার হবে ।
বা টেলিফোনের পাশে যে ড্রয়ারটা আছে- ওখানে রাখতে পার।
সোমবার দিন রুমানার প্রেমিক ছেলেটার সাথে কথা বল। ওকে বাসায় আসতে বল। একা।
অবশ্যই একা। শুধু বলবে রুমানার ব্যাপারে গোপন কিছু কথা বলতে চাও। বা বল কিছু ছবি আছে তোমার কাছে ।রুমানার ছবি। বাজে ধরনের ছবি।
না এসে পারবে না বেচারা।
বিশ্বাস করো। এই কায়দা কাজে দেবেই দেবে। কোন প্রেমিক চায় না ওর প্রেমিকার ছবি অন্য পুরুষের কাছে থাকুক। তাও আবার ইয়ে ধরনের ছবি।
মঙ্গলবার ভাল দেখে লম্বা একটা কার্পেট যোগার কর।
আর তোমার গাড়ির পেছনের বুথ খালি করো। একদম খালি। জায়গা দরকার । কার্পেট রাখবে ঘরের ভেতরে। কার্পেটের মাপ যেন গাড়ির বুথের মাপের সাথে মেলে।
বুধবার আসার কথা না রুমানার সেই প্রেমিক ছেলেটার ? আসুক।
আপ্যায়ন করে বসিয়ে খেজুরে আলাপ শুরু কর। হাতুড়িটা ঠিকমত ব্যবহার করো। ওর লাশটা কার্পেট দিয়ে প্যাচিয়ে গাড়িতে ভরে নাও।
গভীর রাতে নদীর পাশে চলে যাও। তারাপদ বাবুর মিষ্টির দোকান ছাড়িয়ে আরও পিছনে বড় বট গাছের আড়ালের জায়গাটার কথা বলছি। আগে রাতের বেলা নেশাখোরদের আড্ডা বসতো ওখানে।
আজকাল বসে না। সমস্যা হবে না।
গাড়ি খালি করে চলে এসো।
হাতুড়িটা ভাল করে পরিষ্কার করো।
ভাল করে দেখ, দেয়াল বা সোফায় মগজের টুকরো বা রক্ত আছে কিনা। এই জিনিসগুলো নানান জায়গাতে বিচ্ছিরি ভাবে লেপটে থাকে। আরেক যন্ত্রণা।
বৃহস্পতি বার রুমানাকে ফোন দাও। সমবেদনা জানাও। ওর দুঃখের ভাগি হও।
শুক্রবার ওকে গিফট পাঠাও। ফোন দাও। দুঃখের ভাগি হও। পরদিন দেখা করতে বলো – নদীর ধারে দুইজনে আগের মত একটু সময় কাঁটাতে চাও।
যেখানে তোমাদের অতীতের অনেক মধুর স্মৃতি আছে।
কাজ হবেই।
মেয়েরা পুরানো জায়গায় ফেরত যেতে চায়। মেয়ে মাত্রই বোকা যে।ওদের সবার মধ্যে কমন কিছু মিল আছে।
রুমানা রাজি হবে।
ওর জন্য চকোলেট আর ফুল কেন। দামি দেখে কিনবে । মেয়েটা আসলেও সুন্দরী। ক্রিমশন রঙের গোলাপ ভাল হয়। মনে হয় ভেলভেটের জিনিস। সুইস কোম্পানির কি একটা চকলেট আছে না ? মুখে দিলেই গলে যায়। মনে হয় চুমু খাচ্ছ পুরানো প্রেমিকাকে , ওটা কিনো। যে যাই বলুক আজও ফুল আর চকলেট দিয়ে মেয়েদের খুশি করা যায়।
শনিবার গাড়িতে করে ওকে নিয়ে যাও। খেয়াল রাখবে , লোকজন যেন না দেখে ওকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছ।
সাথে করে হাতুড়িটা নেবে মনে করে ।
কাজ হবেই। তোমার সফলতা কামনা করি।
ইতি- মিলন গাঙ্গুলী
( অহ । বলতে ভুলে গেছি- হ্যাপি ভ্যালেনন্টাইন । )